. Informed . Opinions .

October 25, 2016

সাম্যবাদী

Filed under: General — Raja @ 12:28 PM

ক্লাসের ব্ল্যাকবোর্ডে প্রমাদবাবুর কলকাতা যাওয়ার আগের লেখা এখনো আছে, “the law of conservation of energy states that the total energy of an isolated system remains constant ………..”

***

প্রমাদবাবু পদার্থবিদ্যার শিক্ষক। প্রমাদ বোম। অবশ্য সে নামটা ছাত্ররা ছাড়া বিশেষ কেউ জানে না – প্রসাদ বোস বলেই জানে। যেদিন প্রথম ব্ল্যাকবোর্ডে “কুলম্বের মূত্র” লিখেছিলেন, সেদিন থেকেই ছাত্রদের কাছে তিনি প্রমাদবাবু। “স” কে অনেকটা “ম” এর মত লেখেন বলেই এই মুখ্যাতি। থুড়ি, সুখ্যাতি। পরের দিন থেকে যাবতীয় সূত্র তিনি ইংরেজিতে লেখা শুরু করলেন, কিন্তু নামটা থেকেই গেল.

প্রমাদবাবু পন্ডিত মানুষ – অন্তত তাঁর নিজের তাই ধারণা। বলেন, “মার্ক্স একেবারে গুলে খেয়েছি রে.” তবে এই পান্ডিত্যের ব্যাপারে পটলের দিদা একমত নন. তিনি বলেন, “বাবা পেসাদ, মার্ক পড়েছ, পড়েছ। একটু বিবেকানন্দের লেখাগুলোও নেড়েচেড়ে দেখলে পারতে। ক্ষেতি তো কিছু ছিল না.”

প্রমাদবাবু বলেন, “মাসিমা, পড়ার বইয়ের তো শেষ নেই. তারই মধ্যে বেছেবুচে যা মানব সচেতনতাকে জাগিয়ে তোলে, উদ্বুদ্ধ করে, তাই পড়া উচিত। এঙ্গেলস থেকে ইয়েচুরি, সবাই কি বলেন জানেন মাসিমা, ……”

পটলের দিদার কাছে বিবেকান্দর বাইরে সবই বিদেশী। তিনি থামিয়ে দেন, “রাখো বাপু তোমার বিদেশী লোকেদের কথা. দেশের লোকের লেখা কোনো বইই কি তোমার ভালো লাগে না? যদি ফিলোজপিই পড়বে তো একেবারে গোড়ার থেকে শুরু করো না বাপু, সেই বেদান্ত থেকে”

“মাসিমা, কাকে বিদেশী বলছেন! আমরা সবাই বিদেশী এই দেশে। এই যে ভারত ভারত বলে সবাই চেঁচায়, এরা এসেছে তো হাজার তিনেক বছর আগে – এসে স্থানীয় সভ্যতা ধ্বংস করে, লোকেদের মেরে, এখানে বসতি করেছে। আর আপনার বেদান্ত? সে কি ভারতের? নাম করা ঐতিহাসিকরা বলেন সংস্কৃত ভাষা আর বেদ সব এসেছে সিরিয়া জর্ডান থেকে।”

“কে নাম করা লোক বলে এসব? এই তো গহনানন্দ মহারাজ এসে বলে গেলেন, আমাদের ভারত থেকেই সব জায়গায় সভ্যতা ছড়িয়েছে।”

“হাসালেন মাসিমা। আমি বলছি ইয়েচুরি আর আপনি বলছেন কে গহনান্দ।”

“গহনান্দ নয় বাবা, গহনানন্দ। বেদান্তের বড় পন্ডিত।”

“বেদান্তের পান্ডিত্য দিয়ে যদি পৃথিবীর দারিদ্র দূর হত, তবেই সেই পন্ডিত হওয়া সার্থক। যে বেদান্ত শ্রমজীবীদের অপমান করে সে বেদান্তে আমার স্পৃহা নেই. যে বেদান্ত বলে মুসলিম মানুষদের মারো, সে বেদান্ত আমার নয়. আমার তো লজ্জা হয় নিজেকে ভারতীয় বলতে, লজ্জা হয় আমার পূর্বপুরুষদের বর্বরতায়।”

“এ সব কি বলছো বাবা? তুমি কোন বেদান্তে এ সব পেলে?”

কিন্তু এই সব বেদান্ত আর বিবেকানন্দ আওড়ানো প্রতিক্রিয়াশীল লোকেদের কথায় বেশি কান দিতে গেলে কাজের কাজ কিছুই হবে না. প্রমাদবাবু যে সমাজবাদী সুখী বিশ্বের লক্ষ্যে একনিষ্ঠ কাজ করে চলেছেন, তার আসন্ন পরবর্তী পদক্ষেপ হল ভারতীয় সাম্যবাদী দলের এক অনুষ্ঠানে কলকাতায় যাওয়া। কলকাতায় Eliminate Poverty and Starvation নামে বিরাট এক অনুষ্ঠান হতে চলেছে। দেশ বিদেশ থেকে নানান পন্ডিত মানুষ আসবেন যাঁরা প্রমাদবাবুর ভাষায়, “মার্ক্সের ব্যাপারে এক এক জন authority.”

 

পলাশপুর ইস্কুলে শিক্ষকতা করে বেশি রোজগার হয় না. তার ওপর সাম্যবাদী দলের তহবিলে সম্প্রতি নিজের যাবতীয় সঞ্চয় উজাড় করে ঢেলে দিয়েছেন প্রমাদবাবু। সেই পয়সায় যদি পৃথিবী থেকে দারিদ্র দূর করা যায়, তাহলে ছেলে অবিনাশ একবেলা না খেয়ে থাকলেও প্রমাদবাবুর দুঃখ নেই.

ছেলের জন্মের পর প্রমাদবাবুই নাম রেখেছিলেন অবিনাশ – যেমন অবিনাশ তাঁর দর্শন, যেমন অবিনাশ মহান মার্ক্সবাদ। কিন্তু ছেলে অবিনাশ হলেও, তার মা সাম্রাজ্যবাদের মতই ক্ষীণজীবী ছিলেন। অবিনাশের মা প্রায় বিনা চিকিৎসায় সামান্য রোগে মারা যান. বুর্জোয়া ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে চাননি প্রমাদবাবু। স্ত্রীর মৃত্যুর পর একটা ব্যাপার নিয়ে একটু দ্বিধায় পড়েছিলেন তিনি – মৃতদেহ সৎকার! প্রতিক্রিয়াশীল মানুষদের মত তিনিও কি শ্মশানে যাবেন, না ……….. প্রগতিশীল মানুষের কি করা উচিত সে ব্যাপারে কোনো বিধান দেওয়া নেই কোথাও! গুলে খাওয়া মার্ক্স্ বমি করে – থুড়ি, আবার পড়ে – কিছু না পেয়ে শেষে রফিকুল ভাইয়ের সঙ্গে পরামর্শ করে গোর দিলেন। বলা বাহুল্য, সেদিন থেকে আর কোনো আত্মীয়ের সঙ্গে আর যোগাযোগ রইলো না. পলাশপুরে কিছু কানাকানি চললেও, কিছুদিন পর লোকে ভুলেই গেল এ সব. অবশ্য সাত বছরের অবিনাশ ভুলল কি না বলা যায় না. তবে একবেলা খেয়ে আর একবেলা কেঁদে তার দিন চলতে লাগল।

 

এমতাবস্থায় পলাশপুর থেকে কলকাতা যাওয়ার খরচ, কলকাতায় থাকার খরচ, আর কলকাতায় খাওয়ার খরচ জোগাড় করা আমেরিকায় সাম্যবাদ প্রতিষ্ঠা করার থেকেও কঠিন। ভোটের আগে যে মিটিং-মিছিল হয়, তাতে নিয়ে যাওয়ার জন্যে ট্রাক আসে, ট্রাক বোঝাই করে ভোর বেলা নিয়ে যায়, আবার পরের দিন দুপুরে নামিয়ে দিয়ে যায়. কিন্তু দারিদ্র দূরীকরণের আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠান বলে কথা – এখানে ট্রাক বোঝাই লোক নিয়ে যাওয়ার বদলে হয়ত সেই পয়সায় কোনো গরিব দেশের জনগণের দুবেলা খাওয়ার ব্যবস্থা করছে সাম্যবাদী দল! তাছাড়া, ট্রাকে করে যেতে অবিনাশ বড় কাঁদে – বলে ভিড়ের চাপে নিঃস্বাস নিতে পারে না নাকি। কাজেই যা দু-পয়সা আছে তাই দিয়ে ট্রেনে যাওয়ার ব্যবস্থা করলেন তিনি।

ট্রেনে যাওয়া হল, খাওয়া হল না. আগের দিন সকালের পর থেকে খাওয়া হয় নি যাওয়ার উত্তেজনায়। তার ওপর ষ্টেশন থেকে প্রায় তিন ঘন্টা হেঁটে অনুষ্ঠানের জায়গায় পৌঁছে প্রমাদবাবু দেখলেন দুটি জিনিস নেই – তাঁর মানিব্যাগ নেই, আর কোনো অনুষ্ঠান মঞ্চ নেই. মানিব্যাগ কোথাও কেউ তুলে নিয়েছে পকেট থেকে। আর মঞ্চ নেই মানে মিটিং-মিছিলের মতো বরাদ্দ ডিম্-পাউরুটি-কলাও নেই. তাছাড়া ডিম্ কলা দেবেই বা কে? অনুষ্ঠানের জায়গাটা তো আসলে একটা বিরাট হোটেল।

প্রমাদবাবু একটু ধাক্কা খেলেন – এইভাবে কি সাম্যবাদী দল পয়সা নষ্ট করছে? তবে নাও হতে পারে – হয়তো কোনো বড়লোক মানুষ এখানে অনুষ্ঠান করার পয়সা দিয়েছে। হয়তো মিটিং মিছিল-এর মত খাবার না দিয়ে ভেতরে ভালো আয়োজন করা হয়েছে দরিদ্র লোকেদের জন্যে! খাবার! ২২ ঘন্টা অনাহারের পর খাওয়ার কথা ভাবতেই খিদে পেলো জোর. অবিনাশকে নিয়ে প্রমাদ বাবু এগোলেন কাঁচের দরজার দিকে।

প্রমাদবাবু আবার ধাক্কা খেলেন – এবার দারোয়ানের কাছে। তিনি নিজের পরিচয় দিয়ে বুঝিয়ে বলার চেষ্টা করতে আরেকটু ধাক্কাধাক্কি হল শুধু। শেষে বাপ্-বেটাকে ফুটপাথে ঠেলে বার করে দেওয়া হল. অপমানে আর ক্লান্তিতে সেখানেই আস্তে আস্তে ঘুমিয়ে পড়লেন প্রমাদবাবু।

***

ঘুম থেকে উঠে প্রমাদবাবু ফিরেছিলেন একা. হোটেল থেকে থানা, সেখান থেকে স্টেশন – ট্রেনে টিকিট ছাড়া উঠে, কোনমতে চেকারকে এড়িয়ে পলাশপুর। বাড়ি যান নি, ইস্কুলে ফাঁকা ক্লাসরুমের মধ্যে পাথরের মত বসেছিলেন।

হয়ত ব্ল্যাকবোর্ডে লিখতেন, “The law of social conservation states that the collective weight gained by the participants after the sumptuous dinner at the Eliminate Poverty and Starvation event is approximately equal to the weight of the scavenging child behind the pantry, beaten to death by the police!”

May 31, 2016

The Positive Sciences of the Ancient ‘Hindu’s and Other Books

Filed under: India — Tags: , , , — Raja @ 2:54 PM

Click on the ‘pages’ to flip

The Positive Sciences of the Ancient Hindus

http://hdl.handle.net/2027/mdp.39015013134401?urlappend=%3Bui=embed

The positive background of Hindu sociology

http://hdl.handle.net/2027/mdp.39015036357575?urlappend=%3Bui=embed

Hindu achievements in exact science; a study in the history of scientific development

http://hdl.handle.net/2027/mdp.39015031080354?urlappend=%3Bui=embed

September 15, 2015

চেনা গপ্পো

Filed under: Holy Fcuk, India — Raja @ 3:43 PM

কল্লোলবাবুর দিকে তাকিয়ে সন্ন্যাসী বললেন, “কি রে শুও.. …চ্চা, চিনতে পারছিস? বেশ তো গোঁফ কামিয়ে চশমা লাগিয়ে গুছিয়ে বসেছিস দেখছি এখানে”
কল্লোলবাবু গ্রামের স্কুলের নতুন বাঙলা টিচার। প্রথমে চমকে গেলেও সামলে নিলেন। একটু রেগেই গেলেন বলতে গেলে। বললেন, “কি হচ্ছে কি? পুলিশে জানতে পারলে পেঁদিয়ে গৌরীকান্ত করে দেবে যে |”
“আঁ, গৌরীকান্তর কি হয়েছে আবার?”
“আঃ, গৌরীর কিছু হয় নি, ওর বাপের নাম খগেন ছিল । ….. তাই বললাম |”
“খুব কথা ফুটেছে দেখছি? তা ভালো, একটা থাকার ব্যবস্থা কর দেখি এখানে। সাধু সন্ন্যাসী তান্ত্রিক দের বাজার দর কেমন চলছে এখানে? আরো দু-চার জায়গা ঘুরে দেখলাম, বুঝলি, লোক-এর ভক্তি আছে তো পয়সা নেই, পয়সা আছে তো ভক্তি নেই. দুনিয়াটা নরাধমে ভরে গেল রে |”
“দেখি কি করতে পারি।”
“দেখি টেখি নয় বাপু, আমায় কোথাও যেতে হলে এবার তোমায় সঙ্গে নিয়ে যাব, খেয়াল রেখো ।”
“by the way, দাড়িটা কি আসল না নাটকের দল থেকে ঝাড়া?”
“এই দাড়ি বানাতে গেলে আমাকে আড়াই বছর বয়স থেকে দাড়ি রাখতে হত রে হারামজাদা”
“আঃ, ভাষাটা একটু সংযত করুন |”
“ওরে বান…”
“থাক থাক. এবার শুনুন কি করতে হবে |”
“বলে ফেল, ততক্ষণ আমি মুড়ি বাদাম দিয়ে দু পেগ মেরে নি |”
“শুনুন। ওই দুরে সাদা বড় বাড়িটা ব্রজবিলাস বাবুর। বড়লোক। ধার্মিক মানুষ। ওনাকে পটাতে পারলে আধেক মুশকিল আসান। পারবেন?”
“ও তুই আমার ওপর ছেড়ে দে | বাকি প্ল্যান বল |”
“ওনাকে দিয়ে শুরু করুন। আমি দেখছি আপনাকে হিমালয় ফেরত বলে চালিয়ে কিছু ব্যবস্থা ……..”
“পাগল না হরিশ্চন্দ্র? খবর্দার হিমালয় বলিস না – হিমালয়ের ঢপ দিতে গিয়ে এক জায়গায় রাম ক্যালান খেয়েছি। জায়গাটা সুবিধের নয়, চেনাশোনার মধ্যে কোনো জায়গা বল”
“specialization কি বলবো? পারিবারিক শান্তি? গুপ্তরোগ?”
“না না, রোগ টোগ নয়. লোক ভাড়া করে নাটক করাতে অনেক টাকা লাগবে । মন্ত্রপূত ফুল দিতে পারি – অনেক practice করেছি ………”

ব্রজবিলাস বাবুর বাড়ির পাশে রাতারাতি একটা ছোট বাড়ি তৈরী হলো – রতনলাল বাবার আশ্রম। ধুলাগড়ি ধামের কথা আস্তে আস্তে ছড়িয়ে পড়তে লাগলো। রতনলাল যে সে সন্ন্যাসী বা তান্ত্রিক নয়. আজকাল তো আকছার হিমালয়-ফেরত সাধু সন্ন্যাসী দেখা যায় দেশের আনাচে কানাচে। কিন্তু রতনলাল সবার চেয়ে আলাদা। হিমালয়ে হাজার হাজার বছর ধরে তপস্যা করে সাধু সন্ন্যাসীরা হিমালয়ের জ্ঞানের ভান্ডার শুষে নিয়েছেন একেবারে। সেখানে তপস্যা করে কোনো জ্ঞানলাভের আশা নেই বুঝতে পেরে রতনলাল তপস্যা করেছেন সুন্দরবনে। আড়াই বছর বয়স থেকে। অবশ্য এ ব্যাপারে সন্ন্যাসীমশাই কিছু বলেন না – নিজের ঢাক পেটানো সাধু সন্ন্যাসীদের মানায় না | এ সব কল্লোলবাবু স্বপ্নে জেনেছেন।

আড়াই বছর থেকে বিয়াল্লিশ বছর কঠোর তপস্যা আর তন্ত্রসাধনা করার পর একদিন হঠাৎ তপস্যারত রতনলালকে একটি বাঘ আক্রমণ করে | ক্রোধিত রতনলাল বাঘটিকে এক চড় মারেন। সেই চড়েই বাঘ মারা যায় আর মৃত বাঘ থেকে স্বয়ং মহাদেব বেরিয়ে বলেন, “বাবা রতন, তোমার সাধনায় আমি খুব happy, তুমি এই বাঘের চামড়া আমার একনিষ্ঠ ভক্ত বড়বাজারের রাকেশ ঝুনঝুনওয়ালাকে দিও | সময় সুযোগ পেলে আবার এসো, আমি আবার বাঘ রূপ ধারণ করে তোমার সামনে আসব | আমার আরো কিছু মারোয়াড়ি ভক্তের মনস্কামনা পূর্ণ করব তোমার পুণ্য হাত দিয়ে ।”

এভাবেই চলছিল। কিন্তু সুন্দরবনে বেশ কয়েকবছর হোলো পুলিশের নজর বেড়ে যাওয়াতে মহাদেব ক্ষুণ্ন হলেন – দেখা দেওয়া বন্ধ করে দিলেন। তখন রতনলাল বেরিয়ে পড়লেন দেশের সাধারণ মানুষের সেবা করতে। তবে যেহেতু পুলিশের অধার্মিক আচরণে মহাদেব ক্ষুণ্ন হয়েছিলেন, সেহেতু রতনলাল পুলিশ দেখলেই নিজেকে মায়াবলে অদৃশ্য করে ফেলেন।

এহেন মহাপুরুষের কথা ছড়িয়ে পড়তে সময় লাগে না | গ্রামের প্রাচীন বটবৃক্ষের তলায় রোজ সন্ধে বেলা ভক্তের ভিড় উপচে পড়তে লাগল। কল্লোলবাবুর তত্ত্বাবধানে গ্রামের স্কুলের ছেলে-মেয়েরা ভক্তিমূলক নাটক পরিবেশন করতে লাগলো প্রতি রবিবার। ধুলাগড়ি ধাম এতই বিখ্যাত হয়ে উঠলো যে হাওড়া-কোলকাতা থেকে লোকজন আসার সুবিধে করতে হাওড়া-ধুলাগড়ি মিনিবাস চালু করার ব্যবস্থা করলেন গ্রামের দুই মাতব্বর – রঞ্জনগোপাল দত্ত আর শিবাশীষ মুখোপাধ্যায় ।

শনি-রোববার করে হাওড়া কোলকাতা থেকে পাপীতাপী লোকজন আসতে লাগলেন। যাঁরা আসতে পারছেন না তাঁরা বাবার ছবির জন্য বায়না করলেন। তবে রতন বাবার আস্তানার কোন ছবি তোলা ছিল বারণ। শোনা যায় মহাদেব যেমন পুলিশ পছন্দ করেন না, তেমন ক্যামেরা দেখলেও ক্ষেপে যান | রতনবাবুই নাকি তার জন্যে দায়ী। মহাদেবের সঙ্গে কোনো এক সাক্ষাত্কারে রতনবাবু তাঁর ছবি নিতে গিয়েছিলেন। ফ্ল্যাশ দেওয়ায় মহাদেবের নেশা চটকে যায় আর তিনি ক্যামেরা ভস্ম করে দেন |

যাহোক, ফটো তোলা না যাক, ছবি আঁকা তো যায়. কল্লোলবাবু কলকাতা থেকে শিল্পী আনিয়ে, ছবি আঁকিয়ে, ফোটোকপি করে, সুলভ মূল্যে তা ভক্তগণের মধ্যে বিতরণ করতে লাগলেন।

আঁকা ছবিতে এখনো দেখা যায় উপচে পড়া ভিড় | দেখা যায় রতনলাল বাবার মাথার পিছনে এক জ্যোতির্ময় বলয় যা বটগাছের নীচের অন্ধকারকে দূর করে দিয়েছে । আর দেখা যায় বটগাছের ওপর থেকে ঝুলে পড়া দুটি সুদীর্ঘ লাঙ্গুল। ধুলাগড়িতে বছর তিনেকের বাসিন্দা একটি হনুমান পরিবারের লাঙ্গুল ওইদুটি। তারা পাশের কলাঝাড় থেকে কলা চুরি করে এনে এই গাছে বসে খায় আর বাবার অমৃতবাণী শোনে।

দিন যায়, মাস যায় – বাবা এসেছিলেন চৈত্রের শেষে । দেখতে দেখতে এসে গেল ভাদ্রমাস । বটবৃক্ষের নীচে রবিবার সকালের ভিড় – তিলধারণের জায়গা নেই | এক মহিলা বাবার কাছে নিজের দুরবস্থার সবিস্তার বিবরণ দিলেন। বাবা আকাশে হাত পাতলেন, একটি রক্তজবা কোথা থেকে এসে গেল তাঁর হাতে। রক্তজবা নিয়ে মহিলা কাঁদতে কাঁদতে বাবার পায়ে লুটিয়ে পড়লেন। যাহোক, কিছু ভক্ত তাকে সরিয়ে নিয়ে গেল | এবার এক মাঝবয়স্ক পুরুষ তার দুঃখের কাহিনী শোনাতে বাবা আবার আকাশে হাত পাতলেন। রক্তজবা এলো. কিন্তু তার ওপর এসে পড়ল একটা কলা |

তারপর যা হলো তা মহা প্রলয় |

সুন্দরবনের বাঘকে চড়-কষানো রতনলাল বাবার সাড়ে উনচল্লিশ বছরের দাড়ি আর বিয়াল্লিশ বছরের চুল ধুলাগড়ির হনুমানের এক থাপ্পড়ে উড়ে গিয়ে বটগাছের ডালে আটকে গেল | ভক্তদের মধ্যে নেমে এলো প্রবল বিস্ময় |

কল্লোলবাবু হঠাৎ বলে উঠলেন – “আহা, বাবার কি মহিমা। এ কি দেখলাম আজ! আরে এ তো ওপরের লেভেলের খেলা। মহাদেবের সঙ্গে স্বয়ং হনুমানের খুনসুটি। আমরা আজ ধন্য হয়ে গেলাম।”

কেউ অবিশ্বাস আর কেউ ভক্তিময় বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে রইল |

তার মধ্যে থেকে একজনের চিৎকার শোনা গেল, “সালা বহেন…. হামাকে নকলী টাইগার স্কিন সেল কিয়ে বাবা বনকে বয়ঠা হ্যায় য়াহাঁ ……. পকড়ো সালেকো ……”

======================

এই পর্যন্ত বলে কপুজেঠু হঠাৎ জিগ্যেস করলো, “বল রাজা, এর পর কি হোলো?”
আমি বললাম, “এর পর আর কী, দুষ্টু লোকটাকে বোধ হয় পুলিশে ধরলো আর ধুলাগড়ির লোকজন সুখে বাস করতে লাগলো।”
জেঠু বললো, “এ কি তোর্ কেলাস থিরির বাংলা সিলেবাসের গপ্পো রে? সুখে বাস করতে পারে গপ্পোতেই। কারণ গপ্পেই লোকজন সুখে বাস করতে চায় |”
“তাহলে কি হলো তার পর?”
“দিন তিনেক পর কল্লোলবাবু স্বপ্ন পেলেন যে রতনলাল বাবাই সাক্ষাৎ মহাদেব – আর তিনি চান যে কল্লোলবাবু রতনলালের আশ্রমে রতনলালের মূর্তি প্রতিষ্ঠা করে পুজো চালু করুন। তার পর ‘আশ্রমের’ আশেপাশে যারা চা-তেলেভাজা-সিঙ্গাড়া-কচুরি বিক্রি করত, তারাও টপাটপ সেই একই স্বপ্ন ‘পেতে’ লাগলো। রতনলাল থাকতে যত না ভিড় হত, এখন তার চেয়ে বেশি ভিড় হতে লাগলো | এমনকি, পরের বছর থেকে চৈত্র সংক্রান্তিতে রতনলালের ধুলাগড়িতে শুভাগমন উপলক্ষে ‘আগমনী মেলা’ চালু হয়ে গেল |”
“আর সেই রতনের কি হলো?”
“তিনি মায়াবলে পুলিশের ভ্যান থেকে নিজেকে অদৃশ্য করে নিয়েছিলেন আর কি | গুজব শোনা যায় যে এখন নাম আর পোশাক পাল্টে অন্য এক ধর্মের গুরু হয়ে বসেছেন।”
“পুলিশ আবার ধরছে না কেন?”
“তুই বুঝবি না – আমাদের secular country কিনা ……”

August 28, 2013

:-)

Filed under: Aaryav — Raja @ 10:33 AM

An irresistibly cute semi-programmable toy that makes the most adorable sounds in the world!

A source of and cure for head-aches

🙂

May 28, 2013

Coming Soon In ‘Theatres’ Near Me! ;-)

Filed under: Blue Diamond! — Raja @ 3:35 PM

While this C&H has become a recent favorite of mine, I couldn’t help posting this one:

 

Coming Soon In Theatres Near Me!

[From: http://www.gocomics.com/calvinandhobbes ]

May 21, 2013

Social Conservation

Filed under: General — Raja @ 10:00 AM

.

The collective weight gained by the participants after the sumptuous dinner at the Eliminate Poverty and Starvation event is approximately equal to the weight of the scavenging children behind the pantry, beaten to death by the police!

.

March 27, 2013

Recognition

Filed under: Blue Diamond! — Raja @ 10:16 AM

It feels, over and over again, like the best recognition I may ever get,

Even when you are crying (even that is so cute!), and you see me suddenly – you beam, tears still sparkling on your cherry cheeks

Even when you are busy at work (trying to grab your mom’s pendant), and you see me – there appears an impish grin on your face

Even when you are crawling towards a forbidden thing (like the fireplace) and I pick you up – you have a shy giggle (Oh! you got me again!)

When I pull up my car on the driveway in the evening, and see you two waiting for me, and your faces light up – that lights up my life

And ………….. even in your sleep, when I caress your hair, you always have a hint of a smile (both of you do 🙂 )

.

March 25, 2013

Returning Home

Filed under: Blue Diamond! — Raja @ 2:15 PM

I come back home every day to a hero’s welcome.

The unbound joy, the slow and unsteady crawl towards me – falling and getting up but not losing focus, and the two bright eyes glowing in the expectation of a hug

The tiny hands touch my cheek. The four cute little teeth nibble on my shirt.

And the most soothing gibberish that anyone has ever heard

I feel blessed 🙂

.

March 21, 2013

Words

Filed under: Blue Diamond! — Raja @ 1:52 PM

My life is now full of words that do not mean anything, but make all the sense in the world.

Those words (or a spontaneous and exceedingly sweet attempt at making words) are like little fluffy clouds. I make my own shapes out of them. None of them is right or wrong or even meaningful. But they make my days worthwhile 🙂

(Started here)

Older Posts »

Blog at WordPress.com.